মোহাম্মদ ইরফান
এসএসসিতে খুব ভাল রেজাল্ট করায় নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে শঙ্কায় ঝিনাইদহের কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়।
এ ঘটনায় মূলহোতা গাফফারসহ তার ২ সহযোগীকে গ্রেফতার এবং অপহৃত ভূক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে র্যাব।
সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
এরআগে এদিন (৭ মার্চ) ভোরে মানিকগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন আবু জার গিফারী গাফফার (৩৫),সাব্বির হোসেন (২২) ও হাফিজুর রহমান (৪৬)।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১ কৌটা এসিড সদৃশ্য বস্তু ,৩টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয় বলে তিনি জানান।
মঈন বলেন,ঝিনাইদহে একটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হন। গত ৫ মার্চ বিকেলে ভিকটিম ও তার এক সহপাঠী প্রাইভেট শেষে রিক্সাযোগে বাসায় ফিরছিলেন। এসময় গ্রেফতারকৃত গাফফার গং ঝিনাইদহ থানার শৈলকূপার একটি রাস্তা হতে ওই শিক্ষার্থীকে মাইক্রোবাস যোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলপন, ঘটনাটি দেশব্যাপী জনরোষের তৈরী হলে মেধাবী ছাত্রীর পাশে দাঁড়ায় তার সহপাঠীরা। গতকাল ঝিনাইদহ শহরব্যাপী সারাদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ করে অবস্থান করে। ঘটনায় তার সহপাঠীদের আহাজারি ও পিতার আর্তনাদ দেশবাসীকে আবেগ আপ্লুত করে।
যারফলে র্যাব ওই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের গ্রেফতারের ব্যপারে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ৭ মার্চ ভোরে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৪ ও র্যাব-৬ এর যৌথ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর এলাকা হতে অপহরণ মামলার প্রধান আসামীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বর্ণিত অপহরণের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে বলেও তিনি জানান।
মঈন আরও বলেন, গাফফার অপহরণ সম্পর্কে জানায়, ভিকটিম একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে ভিকটিম এসএসসিতে খুব ভালো ফলাফল করায় গ্রেফতারকৃত গাফফার ধারণা করে যে ভিকটিম তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। মূলত এই কারণেই সে ভিকটিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দুই দিন পূর্বে ঝিনাইদহ কোর্ট সংলগ্ন এলাকায় গ্রেফতারকৃত গাফফার তার সমমনাদের নিয়ে অপহরণের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত ভিকটিমকে প্রাইভেট পড়া থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রাস্তা হতে অপহরণ করে।
অপহরণ পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য সে ভিকটিমকে প্রথমে রাজবাড়ীতে তার এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার দুইজন সহযোগীকে পরিবর্তন করে নতুন দুজন সহযোগীসহ ভিকটিমকে ঢাকায় নিয়ে আসে। সেখানে আশ্রয় না পেয়ে তৎক্ষণাত মাইক্রোবাস যোগে ভিকটিমকে সিলেটে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পুনরায় ভিকটিমকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে গ্রেফতারকৃত গাফফার ভিকটিমকে এসিড এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাতে ভিকটিম কোন প্রকার চিৎকার বা আওয়াজ না করে। অতঃপর মানিকগঞ্জ হতে ভিকটিমকে উদ্ধার ও আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।