।। মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।।
গতকাল থেকেই বৃষ্টি পড়ছে। ঘরে থেকে বের হবার সুযোগ সিমিত। তারপরও বের হতে হয়। এর মাঝেই গুম হয়ে যাওয়া মুন্নার মায়ের ফোন কল আমাকে নিয়ে গেল স্মৃতির ডাইরেতে। মনে পরলো মুন্নার গুম হয়ে যাওয়ার তারিখটি ৬ ডিসেম্বর।
বাকরুদ্ধ হয়ে আসলো। অনেক কষ্টে জানতে চাইলাম চাচি কেমন আছে। মা’র কন্ঠও মনে হয় বন্ধ হয়ে গেল। শুধু কান্নার আওয়াজ শোনা গেল। অনেক কষ্টে বললো বাবা বেচে আছি পুত্র শোক বুকে নিয়ে। এখন আর আগের মত চোখে দেখথে পারি না। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। মনে হয় মুন্নার বাবা আমাকে ডাকছে। কিন্তু মুন্নার মুখ না দেখে মরতে চাই না। জানি না আল্লাহ আমার সেই আশা পূর্ণ করবে কিনা। পথ চেয়ে আছি সন্তানের মুখ দেখবো বলে।
২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বিমানবন্দর থানার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন মুন্নাকে তার পিতার সামনেই র্যাব পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যান। বুকের ধনকে খুঁজে পেতে হেন কিছু নেই যা তিনি করেননি। সেই যন্ত্রনা বুকে নিয়েই তিনি ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর চলে গেছেন না ফেরার দেশে। মৃত্যু তো মানুষের স্বাভাবিক ও শাশ্বত পরিনতি। কিন্তু এইরকম মৃত্যু বহন করা আমাদের জন্য খুবই কঠিন।
মুন্নার পরিবারের মত আমারাও আশা করি গুম হয়ে যাওয়া মুন্না ফিরে আসবে তার মায়ের কোলে। সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের প্রত্যাশা গুম হয়ে যাওয়া মুন্নাসহ সকলকে তাদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিতে আন্তরিক হবেন।
বিজয়ের ৫০বছরে পা রাখছে বাংলাদেশ। এই বিজয়ের আনন্দ যেন গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরাও ভাগ করে নিতে পারে তাদের স্বজনদের ফিরে পেয়ে।
[ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি]