June 4, 2023, 5:12 am
শিরোনামঃ
আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না, আরও মহাদেশ আছে: প্রধানমন্ত্রী ধামরাইয়ে “চাউনস” এর উদ্যোগে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প বাজেট নিয়ে সমালোচনা লুটপাটকারীদের মুখে শোভা পায় না: ওবায়দুল কাদের কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতির ‘আত্মহত্যা’ ডিবিপি বনিক সমিতির গরু ছাগল হাট উদ্ভোদন করা হয়েছে রাজবাড়ীতে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক মামলা দিয়ে হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে রাজধানীতে কৃষক লীগের আনন্দ শোভাযাত্রা ঝিনাইদহে স্বামী হত্যায় দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থ নাই : বাংলাদেশ ন্যাপ ১০ বছর চাঁদা দিলে পাওয়া যাবে আজীবন পেনশন

চামড়ার ভবিষ্যৎ কী ? ২০ টাকার চামড়ায় লবন লাগে ৩০ টাকার

Reporter Name
  • Update Time : Monday, May 22, 2023
  • 32 Time View

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠনে, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, অনেকটা গর্ব করে বলতে শুনেছি, চা, চামড়া পাট আমার জাতীয় সম্পদ, যার মাধ্যমে একদিন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে । চায়ের অবস্থান আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে,সিলেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পঞ্চগড়, পার্তত্যঞ্চলের অনাবাদী জমি।পাটের সেই সোনালী আশকে ধ্বংস করেছে,আদমজীর মতো বিহৎ শিল্পকে বন্ধ করে দিয়ে। বিশ্ব ব্যাংকের চাপের অজুহাত, নাকি জমির ভাগবাটরা ? রাজনৈতিক অপদর্শিতার জন্য ? হিসাব মিলাতে পারছি না।দেশ ধ্বংস করার কোনো পরিকল্পনা বাদ রাখে নাই,বিগত সরকার। জাতিকে ভালোবাসলে, জাতীয় সম্পদ এইভাবে বিনষ্ট করতে পারে না। এশিয়ার বিহৎ শিল্প আর একটি আদমজী আমরা কল্পনা করতে পারি না। চামড়া শিল্পকে বলা হয় দেশে দ্বিতীয় রপ্তানী খাত, চামড়া আমাদের অনেক স্বপ্ন পুরণ করেছে। বিশ্ব পরিচয়ের বাহক বলা যায়, বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যকে। এখনো বহিঃবিশ্বে মেডইন বাংলাদেশের নাম থাকতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ছিলো, পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এই খাত থেকে আয় করার। সেই লক্ষ্য নিয়ে চামড়া শিল্পকে আধুনিকায়নের জন্য সাভারের হেমায়েতপুর শিল্পনগরী গড়ে তুলেন। কাঁচা চামড়া রপ্তানি বন্ধের পরে, শিল্পের মালিকদের আধুনিকায়নের জন্য ব্যাংক ঋণ ছিলো অবমুক্ত। অনেকেই সরকারের মহৎ পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে শিল্পকে আধুনিক করে বিহৎ শিল্পপতি হয়েছেন, দেশ ও জাতিকে অনেক কিছু দিয়েছেন। অধিকাংশ শিল্পপতি সরকারের উদারতা সুযোগ নিয়ে ব্যাংকে টাকা আত্মসাৎ করে, নিজে ফকির হয়েছেন, জেল খেটেছেন, মামলা মোকরদমার শিকার হয়েছেন, দেশ ও জাতিকে নিঃশেষ করে। আধুনিক শিল্পনগরী এ থেকে আলাদা হতে পারেনি।
হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্পনগরী স্থানান্তর হওয়ার পর থেকে চামড়াকে রাহুরদশায় পেয়েছে। কোরবানীর কাঁচা চামড়ার মুল্য নির্ধারনি সভা ছাড়া বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের আর কোনো বিষয় অবগত নই। প্রতিবার সভায় কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়, সমাধানের কোনো লক্ষ্মণ পরিলক্ষিত হয় না। করোনার জন্য বিগত তিন বছর আলোচনায় ডাকা হয় নাই। কাঁচা চামড়ার শতভাগ যোগানদাতা মাংস ব্যবসায়ীরা, তাদের প্রশিক্ষনের উপর নির্ভর করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড। সরকারের একাধিক বিভাগ এই প্রশিক্ষনের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যায় করে। কীভাবে করে, কাকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয় ? মাংস ব্যবসায়ী ও মাংস শ্রমিকরা থাকে অন্ধকারে। কোরবানীর পশুর চামড়া রক্ষা করার জন্য শত-শত কোটি টাকা ব্যাংক ঋন দেওয়া হয়, কাঁচা চামড়া রক্ষা করার জন্য, মন্ত্রনালয় তদারকি করেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ট্যানারীর মালিকরা কাঁচা চামড়া কিনছে কি-না ? কাঁচা চামড়ার বেপারীদের মাংস ব্যবসায়ীদের ও আড়ৎদারদের,মাদ্রাসা এতিমখানার বকেয়া ঋনের টাকা পরিশোধ করছে কি-না ? এই প্রশ্নগুলোর কোন উত্তর মাঠ পর্যবেক্ষক টিমের কাছে নেই। এককোটি বিশ লক্ষ কোরবানির চামড়া রক্ষা করার মুল বিষয় পুজি।মাঠ পর্যায় পুঁজির অভাবে চামড়া নষ্ট হয়, তারা কীযে পর্যবেক্ষন করেন ? শুধু নিরাপত্তা ছাড়া।পশুর বর্জ্য এখন রপ্তানীর কোন পর্যায়ে এসে নেমেছে ? আর কতটা নামলে হুঁশে আসবেন প্রশাসন ? আমার বোধদয় হচ্ছে না।
কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খোজার চেষ্টা করছি, কারণ এই পেশার সাথে সুদীর্ঘ ৫৪ বছর জড়িত। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের সাথে বাঙালির ভাগ্য সংযুক্ত । চোখের সামনে ডলার এখন কুকুরে খাচ্ছে, পশুর বর্জ্য রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। একটি ছাগলের চামড়ার দাম ২০ টাকা থেকে শুরু হয়, লবণ লাগে ৩০ টাকার, কারিগরের খরচ, আড়ৎদারি, গাড়ী ও গুদামঘরে ভাড়ায় না পোষানোর জন্য, ২০ টাকায় কিনেও ফেলে দিতে হয়।পরিবেশের বারোটা বাজে,সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ীতে, দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি।সিটি কর্পোরেশনের এই একটি কাজের প্রসংসা করতেই হয়। কোরবানীর ২৪, ৩৬ ঘন্টার মধ্যে নগর পরিস্কার পরিছন্নের জন্য। কোরবানীদাতার পশুর চামড়া বিনেপয়সাতে দিতে চাইলেও নেওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। গরুর চামড়া দুইশ থেকে শুরু হচ্ছে, সাত আটশ উপরে উঠে না। বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের বেঁধে দেওয়া দামের তোয়াক্কা করে না। বাস্তবায়ন করার জন্য আইনের কোনো সহযোগীতা নাই । কত পারসেন্ট চলে, আমার জানা নাই। অথচ ২০১২-১৩ সালেও তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।ছাগলের চামড়া তিন থেকে চারশ টাকায়। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের চিক্কার, মাদ্রাসা, এতিমখানা, লিল্লাহ বেডিং, চামড়া শিল্পের মালিকদের কাছে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করতে কেউ এগিয়ে আসছে না। অথচ কোরবানীর এক কোটি বিশ লক্ষ চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ী ছাড়া রক্ষা করা সম্ভব না।
ঈদের সারাদিন মিডিয়াতে বসে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের বিষদাগার ছাড়া শিল্পের মালিকদের আর কোনো কাজ আছে বলে আমার মনে হয় না। যেই শিল্পের মালিকরা দেশ,জাতি ও শিল্পের উন্নয়নে কাজ করেন, তাদেরকে মিডিয়াতে দেখা যায় না। মিডিয়া ডেকেও আনতে পারে না। চামড়া শিল্প উন্নয়নে, উন্নত আলোচনা হয় না। প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করতে পারলেও সমাধানের পথে এগুচ্ছে না। হয়তো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেঙে যাওয়া ভয়ে, স্বার্থ বিনষ্টের অজুহাতে লক্ষ্য অর্জনের প্রতিবন্ধকতা কাটছে না। ষরসের মাঝে ভুত থাকলে কোনো ওজায় বীষ নামাতে পারবে না। কোরবানীর ঈদের বাকী আছে মাত্র একমাস কিছুদিন। এখনো জাতির জন্য মন্ত্রনালয়ের কোনো বার্তা নাই। কোরবানীর চামড়ার কী হবে ? কোরবানি দাতার বিষয়টা বাদ দিলেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ও অর্থনীতির হিসেবেটা মিলানোর দায়ীত্ব কে নিবেন ? কার উপর অর্পিত ? আপনাদের হুলুস্থুল কী ঈদের দিন সকাল থেকে পরেরদিন সকালে ফুস ? মিডিয়া চলবে মাস ব্যাপি। কাঁচা ও ফিনিক্স চামড়া রপ্তানীর সুরাহা না হলেও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বিশ্বব্যাপি। বাংলাদেশে চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে। তবু কেনো চামড়া রক্ষায় এতোটা অনিহা। একজোড়া জুতোর দাম, একটি মানিববেগের হিসেব মিলাতে পারছি না। মৌসুমি ব্যবসায়ী, এতিমখানা মাদ্রাসা সহ চামড়ার সাথে যুক্তদের সাথে যেই আচরণ করা হচ্ছে। একসময় চামড়ার সুদিনে এঁদেরকে খুজেও পাবেন না। মাত্র দুইশ পঞ্চাশ ট্যানারীর মালিক ও পোস্তার দুইশ নব্বই জন আড়ৎদার কোরবানীর এককোটি বিশ লক্ষ চামড়া রক্ষা করতে পারবেন না। আজ দুরদিনে কোরবানীর চামড়া নষ্ট হচ্ছে। কাল সুদিনে জনবলের অভাবে নষ্ট হবে। কাঁচা চামড়ার অভাবে আপনাদের শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দুইকোটি তিরিশ চল্লিশ লক্ষ চামড়ার জন্য একশত ট্যানারী হলে, চলে। সেখানে দুইশ নব্বইটি ট্যানারী। অথচ চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনে শিল্পের সংখ্যা কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে আপনারা শিল্প উন্নয়নে কাজে লাগাতে চাইলেন না এবং পারলেন না। শেখ হাসিনা যেই দিন থাকবে না, এই সমস্যার অন্তঃসার খুঁজে পাবেন না। সিন্ডিকেটে টাকা কামানো যায়, বিদেশে পাঠানো যায়, নিজের জন্য কাজে আসে না। আমার অনেক বন্ধুকে দেখছি। ছেলে, বৌ, মেয়ে জামাই বিদেশ, তাদের কামানো টাকা বিদেশ। এখন বৃদ্ধাশ্রমে, বিশাল ফাঁকা বাড়ীতে সঙ্গিহীন জীবন নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে কাঁদে। এই তালিকায় অনেক চামড়া শিল্পের মালিকের নাম আছে, জীবনের শেষ সময় হাসপাতালে হাতকড়ায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। দেশ বাঁচলে আপনি বাঁচতে পারবেন, এই কথা মৃত্যুর আগে বুজলে কীআর হবে ? যাদের প্রতিভা ছিলো দেশ গঠনের, তারা নিজেরা গঠিত হয়েছেন,এখন ফুস। এখনো সময় আছে, চামড়াকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করুন, যাদের প্রতিভা আছে।

লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব, রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতি ও  খাস খবর বাংলাদেশ পত্রিকার সম্মানিত উপদেষ্টা মন্ডলী জনাব রবিউল আলম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Dairy and pen distribution

ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102