January 24, 2025, 1:21 pm
শিরোনামঃ
আরাফাত রহমান কোকোর কবরে মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির শ্রদ্ধা আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু বার্ষিকীতে সাখাওয়াত হোসেন নান্নুর গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি বিএনপি মহাসচিব নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটা ১/১১ সরকার চাইছে: নাহিদ ইসলাম ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনঃ ইসি আব্দুর রহমানেল মাছউদ দেশে আমরা জিয়াবাদ, মুজিববাদ চাই নাঃ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে না: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর আরাফাত রহমান কোকোর ১০ম মৃত্যু বার্ষিকীতে শুক্কুর মাহমুদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন

কালের চাকা থেমে নেইঃ এমএ কবীর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় : Tuesday, November 30, 2021
  • 172 Time View

৯ বছর আগে কে বা কারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায় তার স্বামীকে। যে নারী কোনদিন সেভাবে রাস্তায়ও বের হননি শুরু হয় তার জীবনের যন্ত্রণার অধ্যায়। দুই ছেলেকে নিয়ে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত খুঁজে বেড়িয়েছেন স্বামীকে। পেটের চিন্তাও করতে হয়েছে। মারুফার লড়াই চলতে থাকে। অবশেষে স্বামীকে তার খোঁজা শেষ হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেছে তার জীবন। বাবা গুম। মাও চলে গেছেন। সাইদুলের এখন চিন্তা ছোট ভাই রামিমুল ইসলাম রিফাতকে নিয়ে। বাবা যখন হারিয়ে যায় রামিমুলের বয়স তখন আড়াই। সাইদুলের কথা, ‘রামিমুলকে মা কোল ছাড়া করতে চাইতেন না। বাবার স্মৃতি নেই তার, মায়ের হাতে খেত, ঘুমাতোও মায়ের সঙ্গেই। মৃতদেহে হাত বুলিয়ে দেখেও রামিমুলের বিশ্বাস হয়নি মা আর নেই।’

কালের চাকা থেমে নেই। প্রতিদিনই ঘটছে নতুন কিছু। সম্প্রতি একইদিনে পত্রিকায় দুটি খবর বেরিয়েছে। একটি সরকারি। অন্যটি বেসরকারি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। আর বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী করোনাকালে দেশে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়ে গেছে। শহর ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে। একের পর এক মেগাপ্রজেক্ট নেয়া হচ্ছে। এটা মুদ্রার একটা দিক। অন্যপিঠে, দুই বেলা আহার জোগাতে নিদারুণ লড়াই করতে হচ্ছে জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কিছুটা পিছিয়েছি, আমাদের লস (ক্ষতি) হয়েছে। কিন্তু আমরা পুষিয়ে নেব। তবে ইতোমধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শনৈ শনৈ বৃদ্ধি পাচ্ছে, রাত পোহালেই আয় বাড়ছে বাংলাদেশের, আমরা টেরই পাচ্ছি না। আমরা অজান্তেই বড়লোক হয়ে যাচ্ছি।’

দলীয় লেখক-বুদ্ধিজীবীদের প্রসঙ্গ বাদ দিলে নিরপেক্ষ লেখক-বুদ্ধিজীবীদের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে একটি সূক্ষ্ম বিতর্ক বিশে^র দেশে দেশে চলমান। তারা কতটুকু ‘রাজনৈতিক’ হবেন বা কতটুকু ‘অ-রাজনৈতিক’ থাকবেন, তা নিয়েও বিরাজমান এন্তার মতান্তর বেশ পুরোনো।

একদল মনে করেন, ‘শিল্পের জন্যই শিল্প’ হতে হবে। এতে শৈল্পিক নন্দনকলার বাইরে রাজনীতির কোন স্থান নেই, এটাই তাদের সাফ কথা। আরেক দলের মতে, ‘শিল্প অবশ্যই মানুষের জন্য’ এবং এতে আবশ্যিকভাবেই রাজনীতি থাকবে। দলীয় আজ্ঞাবহ হওয়া যাবে না বটে, তবে নীতিগত-মতাদর্শিক রাজনীতি এড়ানো অকাম্য।

১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত হিটলারের জার্মানিতে যেসব বই প্রকাশিত হয়েছিল, তার সবই ছিল অপাঠ্য, জঞ্জাল এবং স্পর্শেরও অযোগ্য দলীয় হুঙ্কার ও স্তুতিবাদে ভরপুর আবর্জনা তুল্য। রক্তের ছিটে আর লজ্জার গন্ধ লেগে আছে তাদের গায়ে। এসব ধ্বংস করে ফেলা উচিত, এমনই বলেছিলেন জার্মান লেখক টমাস মান। তিনি নিজেকে ঘোষণা করেছিলেন অ-রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে। মনে করতেন, লেখক-শিল্পীদের রাজনৈতিক বিষয়াদিতে থাকার দরকার নেই। বাদ-প্রতিবাদেও তিনি যাবেন না। রাজপথের মিছিলে তার নামা সাজে না। লেখকরা লেখক মাত্রই। লেখাই তাদের একমাত্র কাজ। আর কিছু নয়। তথাপি তিনি নাৎসিবাদ-ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত চুপ থাকতে পারেননি।

টমাস মান ১৯২৯ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এরপরই তিনি পৌরাণিক চরিত্র জোসেফকে নিয়ে মহা-উপন্যাস লেখার জন্য বাইবেল পড়তে শুরু করেন। পুরাতাত্ত্বিক অনুসন্ধান করতে তিনি মিসর ও প্যালেস্টাইন ভ্রমণ করেন।

যখন তিনি মহা-উপান্যসটির প্রথম খন্ড শেষ করে এনেছেন, তখন জার্মানিতে হিটলারের নাৎসিরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে শুরু করে। টমাস মান আর জার্মানিতে ফিরে এলেন না। পাশেই জুরিখে চুপচাপ বসবাস করতে শুরু করলেন। তার ছেলেমেয়েরা ও বড়ভাই টমাস মানকে হিটলারের নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ প্রকাশ করতে অনুরোধ করলেন। কিন্তু তিনি তখন পর্যন্ত সেটা করতে রাজি হননি বা কোন রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেননি। কিন্তু যখন হিটলারের বাহিনী শরণার্থীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ চালালো ও গণতন্ত্রের কবর রচনা করে একদলীয় স্বৈরশাহী কায়েম করল, তখন তিনি সভ্যতার শত্রুরূপে নাৎসিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু করলেন। সেটা ছিল ১৯৩৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। তৎক্ষণাৎ জার্মানিতে টমাস মানের রচনাকে হিটলার ‘অ-জার্মান’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করেন। টমাস মান লিখেছেন, ‘দেশ-বিদেশের ফ্যাসিস্টরা অপপ্রচার চালাবে, শ্লীলতা লঙ্ঘন করবে এবং ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে নানাভাবে নিপীড়ন করবে। তবু বিপন্ন শিল্পীরা জানবেন, যেখানেই মানুষের ও জীবনের অসম্মান হয়, সেখানেই শিল্পেরও সমাধি রচিত হয়। অতএব, শিল্পের পক্ষে বলেই মানুষ ও জীবনের পক্ষে দাঁড়ানো লেখক ও শিল্পীর জন্য জরুরি ও আবশ্যক।’

কয়েক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে চলছে দাম বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া। দামের অস্থিরতায় লবেজান আমজনতা। চাল, তেল, মাছ, মাংস, এমনকি মাঠভর্তি শীতের সবজিও রয়েছে ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধির তালিকায়।

দাম বাড়ার বিপদের মধ্যেই হঠাৎ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাজারের আগুনকে যেন দাবানলে পরিণত করেছে। পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্যে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ বড় ধরনের ভোগান্তির মুখে। নির্ধারিত বেতনের চাকরিজীবীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। মাসের খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা অনেকেরই। যারা নিত্যদিন বাজার করেন, তাদের অভিজ্ঞতা মর্মান্তিক। প্রতিদিন বাজারে নতুন নতুন দাম দেখে তারা অস্থির, বিব্রত ও পর্যুদস্ত।
আগে যে ট্রাকের ভাড়া ছিল ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা, এখন সে ট্রাকের ভাড়া ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা। সেই বাড়তি ভাড়া পণ্যের সঙ্গে যোগ করেই পাইকারি বাজারে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে পথে পথে অদৃশ্য চাঁদাবাজি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত বছর করোনার শুরুতে যে দাম বাজারে ছিল তার চেয়ে এখন সব ধরনের পণ্যে ২০ থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি। মাস তিনেক আগে বাজারে ১০০ গ্রাম ওজনের একটি সাবানের দাম ছিল ৩৫ টাকা। সেটা এখন ৪০ টাকায় বিক্রি করছে তারা। বেড়েছে ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, নারকেল তেল, শৌচাগারে ব্যবহার করা টিস্যুসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ভাত খাওয়া কমাতে পারলে চালের ব্যবহার অনেক কমে যাবে। এ দেশের মানুষকে মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয়। সেই মাছ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিলুপ্তির পথে আর বাকি থাকল ভাত। সেটি খাওয়া না খাওয়া নিয়ে চলছে আলোচনা। হাটবাজার,মাঠে-ময়দানে অথবা রেলওয়েস্টেশনে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ দেশে কত মানুষ ঠিক মতো না খেয়ে জীবনযাপন করে। স্যার, ‘দশ টাকা দেন’ আমি না খেয়ে আছি। কেন তারা টাকা চায়? কেন প্রচন্ড শীতে অথবা গরমে রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকে? এর মধ্যে আছে কিছু ভারসাম্যহীন ব্যক্তি আছেন যাদের আমরা পাগল বলে থাকি। তারা কী খায়, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা কী? রাষ্ট্রযন্ত্র কেন নীরবতা পালন করে।

বাজনাপ্রিয় গ্রামবাসী ঘণ্টার শব্দের দিকেই ছুটতে থাকে
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশ-বিএডিসির হিসাবে, দেশের ১৩ লাখ ৭৯ হাজার সেচ পাম্পের ৮৬ শতাংশ অর্থাৎ ১১ লাখ ৯২ হাজার ডিজেল চালিত। বোরো মৌসুমে দেশে ১৬ লাখ টন ডিজেলের ব্যবহার হয় সেচে। সারাদেশেই রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজি, ভুট্টা, ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক। এর মধ্যে আসছে বোরোর মৌসুম। এই মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকরাই প্রধানত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তার সন্তানের পড়ালেখার খরচ বেড়ে যাবে। দিনের পর দিন ঋণগ্রস্ত হয়ে জমি বিক্রি করে সর্বহারা হয়ে পথে বসবে। মাথায় হাত দিয়ে কপালের দোষ বলে নিজেকে সান্তনা দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। অন্য দিকে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে একশ্রেণী লুটপাটের টাকায় পাহাড় গড়ে তুলবে। তখন তাদের টাকায় গড় হিসাব করে মাথাপিছু আয় বেড়েছে বলে আনন্দের উৎসবের মিছিল বের হবে।

বর্তমানে দেশে ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯টি, যা শতকরা হিসাবে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। কেন দিনের পর দিন ভূমিহীনের সংখ্যা বাড়ছে? বাজার সিন্ডিকেট জনগণের পকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছে, পুঁজিপতিদের বাধা দেয়ার কেউ নেই। কৃষকের আন্দোলন নেই, নেই কোন শ্রমিকের আন্দোলন। সবাই যেন ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে শোষণের কারখানায় জ্বলছে।
মহিষ চুরি করা নাকি একজনের পক্ষে সম্ভব হয় না, কমপক্ষে তিনজন লাগে। একজন মহিষের গলার ঘণ্টা খুলে বাজাতে বাজাতে গ্রামের উত্তর দিকে রওনা হয়। দ্বিতীয় জন মহিষ নিয়ে গ্রামের দক্ষিণ দিকে যেতে থাকে, আর তৃতীয় জন ভালো মানুষ সেজে গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশে যায়। ভালো মানুষ সাজা তৃতীয় চোর গ্রামের মানুষকে পরামর্শ দেয়, ঘণ্টার শব্দ যেদিক থেকে আসছে, মহিষ সেই দিকেই গেছে। বাজনাপ্রিয় গ্রামবাসী ঘণ্টার শব্দের দিকেই ছুটতে থাকে। ঘণ্টা নিয়ে যাওয়া প্রথম চোর নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে ঘণ্টা ফেলে দিয়ে অন্ধকারে মিশে যায়। গ্রামবাসী ঘণ্টা খুঁজে পেয়ে সেটা নিয়ে নানা কিসিমের আলোচনায় মশগুল থাকে। এই সুযোগে দ্বিতীয় চোর মহিষ নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যায় আর ভালো মানুষ সাজা তৃতীয় চোরও কিছুক্ষণ পর সটকে পড়ে।

[লেখক : সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি]

শেয়ার করুন
More News Of This Category
ডিজাইনঃ নাগরিক আইটি ডটকম
themesba-lates1749691102