খাস খবর বাংলাদেশঃ প্রাপ্ত বয়স্ক দুজন নর-নারী একসঙ্গে (লিভ ইন) থাকার সময় উভয়ের সম্মতিতে যে শারীরিক সম্পর্ক হয় সেটি ধর্ষণ নয় বলে মন্তব্য করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রোজ সোমবার দেশটির প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে, বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি ভি রামাসুব্রামানিয়ামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত সোমবার এমন মন্তব্য করে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আদালতের ভাষ্য, বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া ভুল। একজন নারীরও কাউকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভেঙে ফেলা উচিত নয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, একটি দীর্ঘদিনের লিভ ইন রিলেশনে যে শারীরিক সম্পর্ক হয় তা ধর্ষণ বলে পরিগণিত হবে।’
পাঁচ বছর একসঙ্গে থাকা এক যুগলের সম্পর্ক ভাঙার পর দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে এমন মন্তব্য করলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চ। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার বাদী তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে তারা দীর্ঘদিন একসঙ্গে ছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গী প্রতারণা করে অন্য এক নারীকে বিয়ে করেছেন। এজন্য তিনি বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বিভা দত্ত মাখিজা বলেন, একসঙ্গে থাকার সময়কার পরস্পর সম্মতির শারীরিক সম্পর্ককে পরবর্তী সময়ে ধর্ষণ বলে মামলা করা হয়েছে। এ কারণে তার মক্কেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টিকে ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।মাখিজা আদালতকে বলেন, এটি মামলার বাদীর একটি ‘অভ্যাসগত’ ব্যাপার। তিনি এর আগে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলেছেন।
এ সময় আদালত বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের বিবেচনায় ‘অভ্যাসগত’ শব্দটি আইনে নিষিদ্ধ। তখন মাখিজা বলেন, তিনি এই বিষয়টির সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন; তবে এই অভিযোগকারীর অভিযোগ যে মিথ্যা তা প্রমাণ করতেই ওই শব্দ ব্যবহার করেছেন।এরপর আদালত আসামিকে আট সপ্তাহের জন্য জামিন দিয়ে এই সময়ের মধ্যে তাকে মামলার বাকি কার্যক্রমের জন্য প্রমাণাদি জোগাড় করতে বলে।
এর আগে ২০১৮ সালে এই ধরনেরই দুটি মামলাতেও প্রায় একই ধরনের পর্যবেক্ষণ ছিল শীর্ষ আদালতের। ওই দুই মামলায় বলা হয়েছিল, কোনো নারী স্বেচ্ছায় কোনো পুরুষের সঙ্গে একত্রে স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকলে সহমতের ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক এবং ধর্ষণের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন। ধর্ষণ এবং সহমতের ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।