করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রতিরোধে প্রয়োজনে মেগা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে অতিদ্রæত করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সরকারের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মন্তব্য করেছে যে, দেশের জনগনের জন্য এই মুহুর্তে মেগা প্রকল্পের উন্নয়ন প্রয়োজন নাই, তাদের জন্য প্রয়োজন করোনা ভ্যাকসিন ও ক্ষিদা মিটানোর জন্য খাদ্য।
মঙ্গলবার (৬ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম আমাদের দেশে করোনা রোগী ধরা পড়ে এবং ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। মানুষও প্রথম দিকে সে লকডাউন মেনে চলছিল। কিন্তু সরকার মানুষকে খাদ্য, চিকিৎসার নিরাপত্তা দিতে না পারার কারণে তা ব্যর্থ হয়ে যায়। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের দায়িত্বহীনতা এই সংকটকে আরও তীব্র থেকে তীব্রতর করছে। সরকারের যথাসময়ে প্রয়োজনীয় উদ্দ্যেগ না নেয়ার কারণে আজ করোনা ভ্যাকসিনের সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার লকডাউন দিচ্ছে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কিন্তু যারা দিন আনে দিন খায় গরিব মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না। তাহলে কি সত্যিই লকডাউন সফল হবে? এই প্রশ্ন আজ দেশের মানুষের।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, করোনা সংক্রমণ সংকটকে জাতীয় পর্যায়ে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। টিকা কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অন্য খাত থেকে বিশেষ করে মেগা প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ অর্থ থেকে টিকা কেনা অতি জরুরি। বিশ্বের যেসব দেশ ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সেসব দেশের প্রায় ৭০/৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সমর্থ হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে সরকারের টিকা কূটনীতিতে চরম ব্যর্থতা, টিকা কেনায় অনিয়ম, হঠকারিতার কারণে দেশে টিকাদান শুরুর পর থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন মাত্র ৪২ লাখ ৮১ হাজার ৭৭৬ জন। এই হিসেবে গত ৬ মাসে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, করোনা থেকে মানুষকে বাঁচাতে অবিলম্বে গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। যেসব দেশ করোনা মোকাবেলায় পাড়া-মহল্লায় মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে তারাই সফল হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দরগুলো বার বার দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকার জনগণকে, রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবেলার উদ্যোগ গ্রহন করে নাই।
নেতৃদ্বয় বলেন, ইতিমধ্যে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ফাঁকা নেই বললেই চলে। তাই দ্রæত বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউগুলো পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, ‘রোগী বাড়লে অক্সিজেন সরবরাহ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে’। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আইসিইউ’র জন্য হাহাকার উঠবে। আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যেতে পারে মৃত্যুর হার। তাই যত দ্রুত সম্ভব সকল জেলায় আইসিইউ স্থাপন এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন সহায়তা নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।