নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপিপন্থী শতাধিক আইনজীবী। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। ইইউ প্রতিনিধিদলের গাড়ি ঘিরেও স্লোগান দেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধিদল অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করতে এলে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বেলা ২টার দিকে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক হয়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জিনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আরপিও, ফৌজদারি-দেওয়ানি আইন এবং নাগরিকের অধিকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন আইনের প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আলোচনায় সুনির্দিষ্ট কিছু ছিল না। সাধারণত বাংলাদেশের আইন সম্পর্কেই তারা জানতে চেয়েছেন। আইনগুলোতে কী আছে, না আছে তা আমি বলেছি।’ তবে কোন কোন আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি এ এম আমিন উদ্দিন।
তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আইনের প্রয়োগ বা কোনো বিশেষ মামলা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।এক প্রশ্নে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশিরা তো নিশ্চয়ই….আইন সংশোধনের প্রস্তাব কারা দেবে? যারা আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট তারাই দেবে। অন্য কেউ তো দেয় না।’
এদিকে ইইউ প্রতিনিধিরা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে আসার খবর পেয়ে বিএনপিপন্থী শতাধিক আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের গেটের সামনে এসে জড়ো হন। পরে সেখানে তারা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
বৈঠক শেষে ইইউ চার প্রতিনিধিকে বিদায় জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মেহেদী হাছান চৌধুরী। তখনো কার্যালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তারা ‘উই ওয়ান্ট ডেমোক্রেসি, নো মোর হাসিনা’, ‘উই ওয়ান্ট ভোটিং রাইট, নো মোর হাসিনা’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর হাসিনা’, ‘উই ওয়ান্ট কেয়ারটেকার, নো মোর হাসিনা’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এ সময় ইইউ প্রতিনিধিরা কিছু সময় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন। মিনিট দুই পর বিক্ষোভ মিছিলের ভেতর দিয়েই বের হয়ে যান। ইইউ প্রতিনিধিরা গাড়িতে ওঠার পর বিক্ষোভকারীরা গাড়ি চারপাশ ঘিরে ধরেন। তখন পুলিশ তাদের সরাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভকারী বিএনপিপন্থী এক নারী আইনজীবী গাড়ির গতিরোধ করতে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যান। পরে পুলিশ তাকে সরালে ধীরগতিতে গাড়ি চলতে শুরু করে। তখন বিক্ষোভকারীরা গাড়ির পেছন পেছন সুপ্রিম কোর্টের বার কাউন্সিল সংলগ্ন গেট পর্যন্ত যান।
বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ ও নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানী একটি দলটি গত শনিবার ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় আসে।