আমার দেখা রায়ের বাজার বদ্ধভুমি পুর্ণাঙ্গ হলো না বুদ্ধিজীবীদের রক্তে ভেজা বটগাছ সংরক্ষণের অভাবে
Reporter Name
Update Time :
Wednesday, December 2, 2020
245 Time View
চতুর্থ পর্ব ৪
জনাব রবিউল আলমঃ ১৩ ডিসেম্বর মনকে বুঝাতে পারছিলামনা, ঘরের দর্জার ফুটো দিয়ে তাকিয়ে আছি, মাঝে মাঝে সেনাবাহিনীর গাড়ীর বহর যাচ্ছে। হটাৎ একটি বাস এসে থামলো ঋৃষীপাড়া গলির সামনে। একদল রাজাকার, আলবদর অস্ত্র হাতে গলিতে প্রবেশ করছে। কিছু সময় পরেই চিক্কারের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, হাত চোখ বেধে, প্রকাশ্যে পেটাতে পেটাতে গাড়ীতে উঠানো হলো তিন জনকে। গাড়ী কমিউনিটি সেন্টারের দিকে চলে গেলো। বেলা ১২ থেকে ১ টা পর্যন্ত কার্ফিও শীথিল করা হলো। রাস্তায় সাধারন লোকজন বেরিয়ে আসছে। আমাকে বের হতে দেখেই বাবা বাধা দিলো, এইতো এখানেই বলে রাস্তার দিকে এগিয়ে গেলাম, বাবা আর বাধা দিলেন না। আমিও রাস্তায় গিয়ে বাবার দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছি। একসময় বাবাকে দেখতে না পেয়ে পুলপার মসজিদের কাছে দিয়ে বটগাছের কাছে গিয়ে দেখি হ্মত বিহ্মত বটগাছ, ব্যানোট ও গুলির চিহ্ন অ হ্ম ত। রক্ত মিশে আছে বটগাছের গায়ে। জমাট বাধা রক্তের থোক মাটিতে, ছেড়া কাপর পুরুষ ও নারীদের। বটগাছের পাশেই ঘাট বাধানো পুকুরের পারে চাটাই বিছানো। তখন বুঝতে না পারলেও এখন বুঝতে পারছি, কি হয়েছিল পুলপার বটগাছের কাছে। রায়ের বাজার বধ্যভুমির ইতিহাস অসম্পূর্ণ থাকবে বটগাছ সংরক্ষিত করতে না পারলে। বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের অজানা থাকবে, তাদের বাবাদের সাথে কি হয়েছিল। কিভাবে হত্যা করা হয়েছিল জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের । বুদ্ধিজীবীদের রক্তে ভেজা এই বটগাছটি এখন অবৈধ দখলে। গাছের ডালপালা কেটেছেটে ছোট করা হচ্ছে, নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা থেকেই হয়তো। দেশের বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি সংরক্ষণ, স্বাধীনতার ইতিহাস রহ্মার জন্য পুলপারের বটগাছ ছাড়া পুর্ণতা হবে না। এই বটগার বাংলা চলচ্চিত্রের জাগহুয়া সাবেরা, আছিয়া ও নবাব সেরাজদৌল্লার চিত্রায়ীতের ইতিহাস জরিত। কিছুটা হুশে আসলাম রাজাকারদের বাঁশী শব্দে। কার্ফিও শীথিলের সময় শেষ হওয়াতে বটগাছের দিকে এগিয়ে আসছে রাজাকারের দল। আমি আস্তে করে সরে পরলাম।পাচটা পর থেকে আবারও কান্নার আওয়াজ পেতে থাকলাম। কতটা অসহায় ছিলাম, সব কিছু জানার পরেও একজন বুদ্ধিজীবী, একজন সাধারন মানুষকেও বাচাতে পারিনি। স্বাধীনতার জন্য কত রক্ত, কত মুল্য পরিষোদ করতে হয়েছে জাতিকে। না দেখা আজকে প্রজর্ম্মকে বুঝানো যাবেনা। আমি দেখাতে পারবোনা বটগাছের চিহ্ন গুলো। কোথায় গুলি ও ব্যানেটের চিহ্ন ছিলো। চলবে আগামীকাল পঞ্চম ৫ পর্ব নিয়ে আসবো।
লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ও রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামলী লীগের সভাপতি জনাব রবিউল আলম।