জনাব রবিউল আলমঃ রহিম বেপাড়ী ঘাটের বাঙালীরা অবস্থান নেয়াতে, কিছু সময়ের মধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গাড়ী এসে পরলো। নেমেই এলোপাতাড়ি লাঠি চার্স করতে করতে সবাইকে চলে যেতে বললো। রশিদ চাচার বড় ছেলে সাজাহান একরোখা স্বভাবের মানুষ। কোনো বাধাই তাকে আটকাতে পারছেনা। সেনাবাহিনীর গাড়ীর সামনে গিয়ে মাদারচোদ বাঙ্গালকো হাইকোর্ট দেখাতা হায়, বলেই পড়নের লুঙ্গিটা খুলে দেখালো। ঘুরে সারতে পারেনি, অমনি রাইফেলর গুলি মাথার পেছন দিয়ে প্রবেশ করে একটা চোখ ও নাকের অংশ বেরিয়ে গেলো। কাছে দ্বারানো মস্তার বাপ, সাজাহানের চাচার নামটা এখন মনে পরছেনা,তার কাঁদের উপর ডলে পরলো। মুহুর্তে জন শুন্য হয়ে পরলো রহিম বেপাড়ী ঘাট। আমিও বর্তমান মুধুমিতা বিস্কুট ফ্যাক্টারীর সামনে এসে পরেছি। মস্তার বাপ সাজাহানের লাশ নিয়ে বসে আছে। লাশ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ। ময়না তদন্তের পরে। পরেরদিন লাশ হস্তান্তর করলেন। বর্তমান সাদেক খানের ভাগ্নে সালামের বাড়ী খালি যায়গায় গোসল করিয়ে চিতার পারে মাটি দেওয়া হলো। আন্দোলন ও রাজপথের বিহ্মোব মিছিল, বাধভাঙ্গা জনতার উল্লাস,পুলিশ ইপিআরের হিংস্র আচরনের ভয়ে সাজাহানের লাশ আজিমপুর গোরস্তানে নেওয়া গেলোনা। আমি বলেই চলেছি। কেউ থামাচ্ছে না। লেখা হচ্ছে, ভিডিও হচ্ছে। একসময় নিজেই থামলাম। বেলাও বেশী নাই। তার উপর বটগাছের ছায়া পরেছে। আগামীকাল সকালে আসতে চাইলো।আমি দুইটার পরে আসতে বলে বাড়ীতে চলে আসলাম। হাবিবউল্লাহ চাচা বাড়ীতে বসে আছে। লোকজন না থাকায় দোকান খুলতে পারেন নাই। আমি সকালে আসছি বলে তাকে বিদায় করলাম। মামার বাড়ীতে টেলিভিশনের সামনে বসলাম। তখনো নাটক এবং বাংলাদেশ সরকার কিছুই দেখাতে পারছেনা। যুদ্ধের, পুরনো চলচ্চিত্র, গান, কবিতা দিয়েই চালাচ্ছে টেলিভিশন। আমার আশা পুরন করবে কে। রাতে ঘুম, সকালে দোকানে। বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে বধ্যভুমিতে। ২৭ শে ডিসেম্বর, আগের মত এখন আর জনসমাগম নাই। দুই চারজন যাও আছে সংবাদমাধ্যম থেকে আসা। অবাঙালীরা মোহাম্মদপুরে নাই, রাজাকার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুই চারজন যাও আছে পহ্ম ত্যাগ করে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছে। তার উপর বড় নেতার আত্নীয় সজন। গতকাল শহিদ বুদ্ধিজীবীদের পরিত্যাক্ত মাথার খুলি ও হাড়গোড় নিয়ে হয়তো কোনো সাংবাদিকেরা ছবি তুলেছিল। এক যায়গায় জমানো থাকায় আমাদের আর কষ্ট করতে হলো না। ইটের খোলা, পুতে রাখা লাশের গর্থ ও হাড়ের ছবি তোলা হলো। আমাকে নিয়ে ঘাসের উপর বসলো। ৭ মার্চের ভাষন, অসহযোগ আন্দোলন, পাকিস্তান বিরোধী জনমত, বাড়ী বাড়ী স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, ২৫ মার্চের কালো রাতের হামলা সম্পর্কে আপনারা সবি জানেন। সারারাত গোলাগুলি হয়েছে মার মুখে শুনা। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মেকাব খানের খোলায় কাঁচা ইটা টানার কাজে আসি। খোলায় আগুন ছাড়া সব কাজ বন্ধ। বর্তমান নাদের খানের মেলার স্থান চিতাপার মেকাব খান, তার বড় ছেলে মিয়াচান খান, নাসিরউল্লাহ সাহেব, রশিদ চাচা, হাসেম খান সহ আরো চার পাঁচ জন বসে আছে।হটাৎ একটা সেল এসে পরলো মাঝখানে। যে যেভাবে আত্নরক্ষা করলো।কিছু সময় পর সবাই আবার একখানেই হাজির। নাসিরউল্লাহ সাহেব চিতার পারের ডালে গিয়ে শুয়ে পরেছিল। পেটের সাথে পুরনো মল, সাথে কিছু পোকা নড়ছে। রশিদ চাচা চিক্কার করে উঠলো,আবে তোর পেট পরিস্কার কইরা আয়।মিয়াচান ভাই ভয়ে খোলায় রাখা তার জিপ গাড়ীটা ঠেলে হাসেম খানের খোলা, বর্তমান কবরস্থান ও সাদেক খানের ঘাটে নিয়ে আসলো,আমিও ছিলাম সেই গাড়ী ঠেলার কাজে।আমি ফিরে এসে বর্তমান তাহের খানের বাজার পুশকুনির পারে দ্বারালাম। মাছের খেলা দেখতে।গতকাল ও পরশু জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়েছে। একটা বোয়াল মাছ আধমরা চিত হয়ে ভাসছে। আমি আস্তে আস্তে মাছটা টানে উঠাতে খোলার দারোয়ান মেকাব খানের কাছে ধরে নিয়ে আসলো। মেকাব খান দারোয়ানকে দমক দিয়ে, বেটা মাছ দিয়া কি করবি,দেশটাই শেষ হইয়া গেছে। আমাকে মাছ নিয়ে যেতে বললো।অনেক খুসী হয়েই মাছ কাঁদে নিয়ে বাড়ীতে হাজির। মা চিক্কার দিয়ে আমাকে বুকে জরিয়ে ধরেই কান্না শুরু করলো। কোথায় গেলি, কেমনে গেলি, আইলি। মাছ কেমনে দরলি। কথার ও কান্নার শেষ নাই। গতকাল আমাকে না থামালেও আজ কিছুটা বিরক্ত হচ্ছে বুঝতে পারলাম। সাংবাদিকর জান্তে চায় রাজাকার, মুক্তিযোদ্ধা ও আহত, নিহতদের বাড়ী ঘর ও তাদের বক্তব্য। আমার মনে এক অজানা আতঙ্ক কাজ করছে। কমিউনিটি সেন্টারের পাশের বাড়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিহ্মকের বৌএর সাহ্মাৎকার আনতে গিয়ে যে অবস্থা ও বিব্রত হয়েছিলাম। মনে হওয়াতে আতংকিত হলাম। আমি তাদেরকে এ জন্য পুর্বপ্রস্তুতির প্রয়জোন। হুট করেই কারো বাড়ীতে গেলে আতংকিত হতে পারে, কথা বলতে নাও পারে। চলবে ২২ পর্ব নিয়ে আসবো।
লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ও রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামলী লীগের সভাপতি জনাব রবিউল আলম।