জনাব রবিউল আলমঃ আমি একজন গুরুত্বহীন মানুষ, ব্যার্থ মানুষ। মনটা ভালো লাগছে না। একা একাই এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করছি। যাখানে মাটিতে পুতে রাখা বুদ্ধিজীবীদের লাশ উত্তোলন করছে, সেখানে গিয়ে পর্যবেহ্মনের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি স্বইচ্ছায়। বিদেশি মিডিয়ার কাজ শেষ। আমার ব্যার্থতা আর তাদের কাছে প্রমান করতে হলো না। যাওয়ার আগে আমাকে বুকে জরিয়ে অনেক গুলো ছবি তুলা হলো। দোভাষীও তুলেন। আমি বুঝতে পারিনি তাদের কাজ শেষ হয়েছে। আমাকে এক শত টাকা ও ব্যাগে থাকা কিছু বিস্কুট, লজেন্সে দিয়ে গেলেন। একটি কার্ড দিয়েছিলেন। ৪৯ বছর পর কোথায় আছে, কি নাম লেখা ছিলো, বলতে পারবোনা। বাড়ী গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এক সাপ্তাহ পর্যন্ত বধ্যভুমিতে আসি, অনেক সাংবাদিকদের সাথে কথা বলি। পরিত্যাক্ত লাশে হাড়গোড়, মাথার খুলি দেখাই। দিন শেষে বিনে পয়সা ফিরে আসি। সাংবাদিকরা টাকাদেয়, ঐ এক হাজার টাকাই আমার জন্য কাল হয়েছিল। লোভ মানুষকে কি পরিমান ধোকাদেয় হাড়ে হাড়ে বুঝেছিলাম। রায়ের বাজারের এক বড় আঃলীগ নেতার বাড়ীতে প্রতি রাতেই হত্যার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজাকার, অবাঙালীদের কে ধরে আনা হতো। সকালে বধ্যভুমিতে গেলেই চোখে পরতো। নামটা সবারই জানা, আমি প্রকাশ করছি না। এখনো অনেক রাজাকার আমার চোখার সামনে দিয়ে হাটে আমার দল আঃলীগেই আছে। কিছু বলার নাই। বটগাছের কাছ দিয়ে হাটার সময় অনেক কথাই মনে পরে। ভাবি রায়ের বাজার বদ্ধভুমির প্রকৃত ইতিহাস কি এই বটগাছ ছাড়া লেখা যাবে ? শহিদের সন্তানরা কি জান্তে পারবে, তাদের বাবাদেরকে কোথায় কিভাবে হত্যা করা হয়েছিলো ? বটগাছটা এখন অবৈধ দখলে। বাওণ্ডারী দিয়ে রাখা হয়েছে। ডালপালা কেটেছেটে আস্তে আস্তে ছোট করা হচ্ছে। কখন যে এই স্মৃতি চিহ্ন মুছে ফেলা হবে কে জানে। যারা শহিদের স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ করার দায়ীত্বে আছেন। তাদের কাছে অনুরোধ বটগাছটি রহ্মা করুন। মুক্তিযোদ্ধার ও শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা এগিয়ে আসুন। এই মুক্তিযুদ্ধের সরকার আপনাদের বিমুখ করতে পারেন না। রায়ের বাজার বদ্ধভুমির ইতিহাস পুলপারের বটগাছ সংরহ্মন ছাড়া পুর্ণাঙ্গ হবে না। চলবে, ১৯ পর্ব নিয়ে আসবো।
লেখকঃ বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ও রাজধানী মোহাম্মদপুর থানার ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামলী লীগের সভাপতি জনাব রবিউল আলম।