মোঃ ইব্রাহিম হোসেনঃ আজ ১৯ এপ্রিল ২০২২ রোজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি গঠন করেছিলেন।
কৃষক লীগের ৫০ বছর পুর্তি উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভাচুয়ালে অংশ নিবেন।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র কয়েক মাসের মাথায় হাজার বছরের শোষিত-নিপীড়িত কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একটি সংগঠন জন্ম দিয়েছিলেন। সেই সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। কৃষককে সংগঠিত করে তাদের ন্যার্যমূল্যে প্রাপ্তি, তাদেরকে ভবিষ্যতে যাতে আর নিপীড়ন-নির্যাতন না করতে পারে বাংলার কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে। কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই ছিল এই সংগঠন ঘটনের মূল লক্ষ। আজকের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পুর্তিতে বাংলাদেশ কৃষক লীগ গ্রামভিত্তিক সংগঠন, ওয়ার্ড ভিত্তিক সংগঠন, ইউনিয়ন ভিত্তিক সংগঠন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেখানে কৃষকের অভয়ারণ্য সেখানেই কৃষক সংগঠন গড়ে তোলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে, কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা যে প্রণোদনা দিচ্ছেন, সেগুলো যেন সঠিক ভাবে কৃষকের ঘরে দৌরগোড়া পৌছায় সেই ভাবে কৃষক লীগ সংগঠিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে কোনো শাসকগোষ্ঠি শাসনের নামে শোষন করতে এসে যাতে বাংলার কৃষকদের নিপীড়ন করতে না পারে সেই কৃষকলীগ তৈরী হচ্ছে। সেই লক্ষে কৃষক লীগ আগামী দিনে কাজ করবে।’
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে সভাপতি ও আব্দুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়। এরপর থেকে সংগঠনটি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে কাজ করে আসছে। ১৯৮১ সালের শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে আবারও কৃষক লীগকে পুনর্গঠন করেন। ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। করোনাকালে প্রায় দুই লাখ কৃষক ও কৃষকের পরিবারের মাঝে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে সংগঠনটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১০টি হটলাইন চালু করে প্রায় চার লাখ শতক কৃষিজমির ধান কেটে মাড়াই করে কৃষকের গোলায় তুলে দেয় কৃষক লীগ। বোরো ও আমন মৌসুমে বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বিনা মূল্যে ধান-সবজিবীজ ও সার বিতরণ করা হয়।
কর্মসূচি: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি-৩২-এ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। ২০ এপ্রিল সকাল ১১টায় খামারবাড়ীর কে আই বি মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাচুয়ালে অংশগ্রহণ নিবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ এপ্রিল সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রান্তিক কৃষক ও কৃষাণীদের মাঝে বিনামুলে কৃষি উপকরণ বিতরণ, ২২ এপ্রিল এতিমদের সাথে ইফতার, ২৩ এপ্রিল সামগ্রিক কৃষিতে সাফল্যের স্বাকৃতিস্বর’প ১১জনকে সেরা কৃষকের সম্মাননা প্রদান, ২৪ এপ্রিল সেরা ৫ জেলা কৃষক লীগকে সম্মাননা প্রদান এবং ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কৃষক-কৃষাণীদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ।
সংগঠনটির সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।